গর্ভাধান, পুংসবন, পঞ্চামৃত, অন্নপ্রাশন, উপয়ন সংস্কার সমূহ
গর্ভাধানাদি সংস্কার প্রকরণ
আদ্যঋতুর মাসফল — বৈশাখ মাসে আদ্যঋতু হইলে কন্যা সুপ্রিয়বাদিনী, জ্যৈষ্ঠে বিধবা, আষাঢ়ে ধনবতী, শ্রাবণে মৃতবৎসা, ভাদ্রে রােগিণী, আশ্বিনে মৃতবৎসা, কার্তিকে স্বকুলনাশিনী, অগ্রহায়ণে ধর্ম্মশীলা, পৌষে রতিবিলা, মাঘে পতিব্রতা, ফাল্গুনে বহুপুত্রবতী এবং চৈত্রে মদনােন্মাদিনী হয়।
আদ্যঋতুর তিথিফল — প্রতিপদে সৌভাগ্যশালিনী, দ্বিতীয়ায় পতিবল্লভা, তৃতীয়ায় শুভ ও আরােগ্যযুক্তা, চতুর্থীতে বাতুলপ্রিয়া, পঞ্চমীতে সৌভাগ্যবতী, ষষ্ঠীতে পরগামিনী, সপ্তমীতে লক্ষ্মীযুক্তা, অষ্টমীতে রােগিণী, নবমীতে বিধবা, দশমীতে সুপুত্রা, একাদশীতে মৃতবৎসা, দ্বাদশীতে পরগামিনী, ত্রয়ােদশীতে সুপুত্রা, চতুর্দশীতে চঞ্চলা, অমাবস্যাতে মৃত্যু ও পূর্ণিমাতে সম্পদশালিনী হয়।
আদ্যঋতুর নক্ষত্রফল — পূর্ব্বফলুনী, পূর্বাষাঢ়া, পূর্ব্বভাদ্রপদ, ভরণী, অশ্লেষা ও আদ্রা নক্ষত্রে আদ্যঋতু হইলে বিধবা হয়, মঘানক্ষত্রে শােকবিশিষ্টা, পুনর্ব্বসুনক্ষত্রে কুলটা, কৃত্তিকা অথবা জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রে দরিদ্রা হয়।
আদ্যঋতুর যোগফল — বিস্কুম্ভে স্ত্রীর দুর্ভাগ্য, অতিগণ্ডে বন্ধ্যা, শূলে শূলরােগ, গণ্ডে পরপুরুষ গামিনী, ব্যাঘাতে আত্মঘাতিনী, বজ্রে স্বৈরিণী, পরিঘে মৃতবৎসা এবং ব্যতীপাত ও বৈধূতিযােগে পতিঘাতিনী, এতদ্ভিন্ন নানানুরূপ ফল।
আদ্য ঋতুর করণফল — ববকরণে বন্ধ্যা বা বিধবা, বালবে পুত্রিনী, কৌলবে প্রমদা, তৈতিলে চারুহাসিনী, পরে | বিনাশ, বণিজে মৃতবৎসা, বিষ্টিতে বন্ধ্যা ও ধনহীনা, শকুনিতে চতুষ্পদ ও কিন্তুপ্নে বিধবা এবং নাগে পুরুষাভিলাষিণী হয়।
আদ্যঋতুর লগ্নফল — মেষ লগ্নে কুলটা, বৃষে পরভােগিনী, মিথুনে ধনবতী, কর্কটে ব্যাভিচারিণী, সিংহে পুত্রবতী, কন্যায় সম্পদশালিনী, তুলায় বিচক্ষণা, বৃশ্চিকে পতিব্রতা, ধনুর পূর্ব্বার্ধে দুশ্চরিত্রা, পরাদ্ধে পতিব্রতা, মকরে মানহীনা, কুম্ভে ধনহীনা এবং মীনলগ্নে সুলক্ষণা হয়।
উক্ত দোষের শান্তি — মাসদোষে গুড় ও তৈল, বারদোষে আতপ চাউল, নক্ষত্রদোষে মণি, যােগদোষে তিল ও স্বর্ণ, তিথিদোযে গাভী, করণদোষে স্বর্ণ এবং লগ্নদোষে বৃষ দান করিতে হয়। দান দ্রব্যাদি গ্রহবিপ্রকে দিবে, অন্যথা নিস্থল।
পর্ব্ব — চতুর্দশী, অষ্টমী, অমাবস্যা, পূর্ণিমা ও সংক্রান্তিকে পর্ব্ব কহে।
গর্ভাধান — লগ্নে সূর্য্য ও চন্দ্র পাপযুক্ত ও পাপ মধ্যগত না হইলেও ইহাদের সপ্তম স্থানে অশুভ গ্রহ না থাকিলেও লগ্নের অষ্টমে মঙ্গল ও চতুর্থ স্থানে পাপগ্রহ না থাকিলে এবং নবম ও পঞ্চম স্থানে ও লগ্ন চতুর্থ, সপ্তম, দশম স্থানে চন্দ্র শুভগ্রহযুক্ত হইলে এবং তৃতীয় ষষ্ঠ একাদশ স্থান পাপযুক্ত হইলে, গণ্ড সময় ত্যাগ করিয়া যুগ্মরাত্রিতে পুরুষের চন্দ্রাদি শুদ্ধ হইলে গর্ভাধান করিবে। ঋতুর প্রথম দিবস অবধি ষােড়শ দিবস পর্য্যন্ত মুখ্যকাল ; তাহার প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ দিন এবং একাদশ ও ত্রয়ােদশ দিন ত্যাগ করিয়া যুগ্মনিশায় গর্ভাধান প্রশস্ত। গর্ভাধান জ্যেষ্ঠা, মূলা, মঘা, অশ্লেষা, রেবতী উত্তরফলুনী, উত্তরাষাঢ়া, উত্তরভাদ্রপদ, অশ্বিনী ও কৃত্তিকা নক্ষত্র এবং পর্ব পরিত্যজ্য।
পুংসবন — রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবারে, নন্দা ও ভদ্রা তিথিতে, পূর্ব্বভাদ্রপদ, উত্তরভাদ্রপদ, পূর্বাষাঢ়া, উত্তরাষাঢ়া হস্তা, মূলা, শ্রবণা, পুনর্ব্বসু, মৃগশিরা, পুষ্যা ও আদ্রানক্ষত্রে পূর্ণচন্দ্র হইলে, যুত বা মিত্রবেধ দশযােগভঙ্গদোষ না থাকিলে চন্দ্রের গােচরাদি শুদ্ধ হইলে, লগ্নের নবম, পঞ্চম, চতুর্থ, সপ্তম ও দশম শুভগ্রহ এবং তৃতীয়, ষষ্ঠ, দশম ও একাদশ স্থানে পাপগ্রহ থাকিলে, স্ত্রীর চন্দ্র তারা শুদ্ধ হইলে কুম্ভ, মিথুন, সিংহ, ধনু ও মীনলগ্নে তৃতীয় মাসে পুংসবন কার্য্য করিবে।
পঞ্চামৃত — রেবতী, অশ্বিনী, পুনর্ব্বসু, পুষ্যা, স্বাতী, মূলা অনুরাধা, মঘা, হস্তা ও উত্তরফল্গুনী নক্ষত্রে, রবি, বৃহস্পতি ও শুক্রবারে শুক্লপক্ষে, রিক্তা ভিন্ন তিথিতে, শুভযােগে, করণ ও শুভলগ্নে পঞ্চম মাসে পঞ্চামৃত দান করিবে। পঞ্চামৃত — দুগ্ধ, চিনি, ঘৃত, দধি, মধু।
সীমন্তোন্নয়ন — মাসাধিপতি বলবান এবং চন্দ্র, শুভগ্রহ কর্তৃক দৃষ্ট হইলে, ষষ্ঠ ও অষ্টম মাসে রিক্তা ভিন্ন তিথিতে, পূর্ব্বভাদ্রপদ, উত্তরভাদ্রপদ, পূর্বাষাঢ়া, উত্তরাষাঢ়া, হস্তা, মূলা, শ্রবণা, পুনর্ব্বসু, মৃগশিরা, পুষ্যা, আদ্রা, অশ্বিনী ও অনুরাধা নক্ষত্রে, মকর ও মেষলগ্নে, মিথুন, তুলা, কুম্ভ ও কন্যাদি রাশির নবাংশে সীমন্তোন্নয়ন করিবে, অপর সমস্ত বিষয় পুংসবনে লিখিত দৃষ্টে করিতে হইবে।
সুখপ্রসবমন্ত্র —
“অস্তি গােদাবরীতীরে জম্ভলা নাম রাক্ষসী।
তস্যাং স্মরণমাত্রেণ বিশল্যা গর্ভিণী ভবেৎ”
উপরিউক্ত মন্ত্র ও পার্শ্বস্থ বত্রিশের ঘর পূরণ করিয়া অশ্বত্থ পত্রে লিখিয়া প্রসূতির কেশে বাঁধিয়া দিলে প্রসবে কোন কষ্ট হয় না।
চন্দ্র নেত্র সমুদ্র বাণ। পৃষ্ঠে নব করি বুঝহ সন্ধান। যাহা কর অঙ্ক তাহা কর আধা। কুম্ভ পদে পদে ভাগ সমাধা।
লগ্নপরীক্ষা — উদয়াবধি কিংবা অস্তাবধি যত দণ্ডে জন্ম হইবে,
![]() |
লগ্ন পরীক্ষা ছক |
তাহার অর্ধেক সংখ্যা লইবে, সূর্য্য যে রাশিতে থাকিবেন, তাহার সহিত ঐ সংখ্যা যােগ করিলে যে সংখ্যা হইবে, সেই সংখ্যক নক্ষত্রে যে রাশি পাওয়া যায়, তাহাই লগ্ন। আর চন্দ্র ও রাশ্যাধিপ গ্রহ যে স্থানে থাকিবে, তাহা অথবা তাহার পঞ্চম, নবম কিংবা তাহার সপ্তমের ত্রিকোণ স্থানে বা সপ্তমে লগ্ন হইবে।
গণ্ডরিষ্টি — অশ্বিনী, মঘা ও মূলা নক্ষত্রের প্রথম তিন দণ্ড রেবতী, অশ্লেষা ও জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রের শেষ পাঁচদণ্ড গণ্ড। মূলার আদি তিন দণ্ড ও জ্যেষ্ঠার শেষ ৫ দণ্ডের নাম দিবাগণ্ড। মঘার। আদি ৩ দণ্ড ও অশ্লেষার শেষ ৫ দণ্ডের নাম রাত্রিগুণ্ড অশ্বিনীর আদি ৩ দণ্ড ও রেবতীর শেষ ৫ দণ্ডের নাম সন্ধ্যাগণ্ড। সন্ধ্যাগণ্ডে জন্ম হইলে শিশুর মৃত্যু হয়, রাত্রিগণ্ডে মাতার ও দিবাগণ্ডে পিতার মৃত্যু হয়। কিন্তু দিবাগণ্ডে জাত কন্যার ও রাত্রিগণ্ডে জাত পুত্রের গণ্ডদোষ হয় না। গণ্ডকালে জাত সন্তানকে ত্যাগ করিবে এবং ছয় মাস পিতা সন্তানকে দেখিবে।। কুঙ্কুম, চন্দন, কুড়, গােরােচনা এবং ঘৃতযুক্ত জল চারিটি কলসে করিয়া সহস্রাক্ষ মন্ত্র পাঠ করতঃ দিবাগণ্ডে জাত সন্তানকে পিতার সহিত রাত্রিগণ্ডে জাত সন্তানকে তাহার মাতার সহিত ও সন্ধ্যাগণ্ডে জাত সন্তানকে পিতামাতা উভয়ের সহিত সংযুক্ত করাইয়া স্নান করাইবে এবং ঘৃতপূর্ণ কাংস্যপাত্র, ধেনু ও স্বর্ণদান করাইয়া গ্রহ সকলের পূজা করিবে, তাহা হইলে গণ্ডদোষের শান্তি হইবে। গ্রহবিপ্রের দ্বারা পূজা করাইবে।
পতাকীচক্র — পতাকীচক্রে ঊর্জে ও বক্রভাবে তিনটি করিয়া রেখা দিবে এবং বক্রভাবে সকলের সঙ্গে বেধ করিবে। তাহাতে পাঁচ, আট, দুই, কুড়ি, ছয়, দশ, চৌদ্দ, তিন, চার অঙ্ক সকল কর্কট অবধি মীন পর্য্যন্ত প্রদান করিবে। লগ্ন হইতে শুভদণ্ড বেধ হইলে জাতকের শুভ ও পাপদগুবেধ হইলে অশুভ হইবে।
বেধের নিয়ম যথা — মিথুন, মীন ও ধনুর সহিত কর্কটের ; বৃষ, বৃশ্চিক ও কুম্ভের সহিত সিংহের বেধ এইরূপে সকলের বেধ হইবে যে রাশির সহিত যাহার বেধ তাহাতেও যত অঙ্ক থাকিবে, তাহা একত্র করিলে যত অঙ্ক হইবে, ততদিন কিংবা মাস কিংবা বৎসর পতাকীর রিষ্টিকাল জানিবে।
![]() |
পতাকীচক্র : বেধের নিয়ম ছক |
যেমন সিংহরাশির বৃশ্চিক ও কুম্ভের সহিত বেধ হওয়াতে বৃশ্চিক অঙ্ক ৬ এবং সিংহের অঙ্ক ৮, কুম্ভের অঙ্ক ৩ এই তিনটি অঙ্ক এক করায় ১৭ হইল ; ইহাতে জানা গেল, ১৭ দিন কি ১৭ মাস কি ১৭ বর্ষ সময়ে বালকের পতাকীরিষ্টি হইবে।
যামার্দ্ধাধিপতি — দিনমানকে আট ভাগ করিলে তাহার এক এক ভাগের নাম যামার্দ্ধ। যে বারে জন্ম হইবে সেই গ্রহ দিনের প্রথম যামার্দ্ধের অধিপতি, তাহার পর ছয় ছয় অন্তর দ্বিতীয়াদি যামার্ধের অধিপতি হইবে এবং রাত্রিমানকে আট ভাগ করিলে যাহা হইবে তাহা রাত্রির যামার্দ্ধ তাহাতে যে বারে জন্ম হইবে, সেই গ্রহ রাত্রির প্রথম যামার্দ্ধাধিপ হইবে, তৎপরে পাঁচ পাঁচ অন্তরে যে যে গ্রহ হইবে সেই সেই গ্রহ তৎপরবর্তী যামার্দ্ধাধিপ হইবে।যথা- রবিবারে প্রথম যামার্ধের পতি রবি, দ্বিতীয় যামার্দ্ধপতি শুক্র, তৃতীয় যামার্দ্ধপতি বুধ ও চতুর্থ যামার্ধপতি চন্দ্র। রবিবারে রাত্রিতে প্রথম যামার্দ্ধপতি রবি, দ্বিতীয় বৃহস্পতি, তৃতীয় চন্দ্র, চতুর্থ শুক্র। কিন্তু রাহু ও কেতুকে গণনা করিবে না।
পিতৃরিষ্টি — বালকের জন্মলগ্নের দশম স্থানে শনি, ষষ্ঠ স্থানে চন্দ্র, সপ্তম স্থানে মঙ্গল থাকিলে এবং সূর্য্য যদি শুভগ্রহযুক্ত কিংবা শুভদৃষ্ট না হন এবং তিনটি পাপগ্রহ কতৃক দৃষ্ট হন তবে বালকের পিতার মৃত্যু হয়।
মাতৃরিষ্টি — জন্ম লগ্নের চতুর্থ স্থানে যদি বলবান পাপগ্রহ থাকে এবং ঐ পাপগ্রহের কেন্দ্রস্থানে পাপগ্রহ থাকিলে এবং জন্মলগ্নের চতুর্থ, সপ্তম, দশম, পঞ্চম ও নবম স্থানে পাপগ্রহ থাকিলে সাতদিনের মধ্যে এবং পাপগ্রহযুক্ত শুক্রের চতুর্থ স্থানে পাপগ্রহ থাকিলে এবং তিনটি পাপগ্রহ কর্তৃক দৃষ্ট চন্দ্রের যষ্ঠস্থানে পাপগ্রহ থাকিলে জাত বালকের মাতার মৃত্যু হয়।
নক্ষত্রের দ্বারা দশা নিরূপণ — কৃত্তিকাদি তিন নক্ষত্রে জন্ম হইলে রবির, আদ্রাদি চারি নক্ষত্রে চন্দ্রের, মঘাদি তিন নক্ষত্রে মঙ্গলের, হস্তাদি চারি নক্ষত্রে বুধের, অনুরাধাদি তিন নক্ষত্রে শনির, অভিজিৎ সহ পূর্বাষাঢ়াদি চারি নক্ষত্রে বৃহস্পতির, ধনিষ্ঠাদি তিন নক্ষত্রে রাহুর, উত্তরভাদ্রপদাদি চারি নক্ষত্রে জন্ম। হইলে শুক্রের দশা হয়।
গ্রহগণের দশাতােগের কাল — সূর্য্যের ছয়, চন্দ্রের পনের, মঙ্গলের আট, বুধের সতের, শনির দশ, বৃহস্পতির উনিশ, রাহুর বার ও শুক্রের একুশ বৎসর দশাভােগ কাল।
রাশি অনুসারে নামের আদ্যক্ষর নির্ণয়
![]() |
নামকরণ — উত্তরফল্গুনী, উত্তরাষাঢ়া, উত্তরভাদ্রপদ, রােহিণী, চিত্রা, অনুরাধা, মৃগশিরা, রেবতী, স্বাতী, পুনর্ব্বসু, শ্রবণা, ধনিষ্ঠা, শতভিষা, অশ্বিনী ও হস্তানক্ষত্রে এবং জ্যোতিষতত্ত্বোক্ত পুষ্যানক্ষত্রে অথবা এই সকল নক্ষত্রের অভাব হইলে ইহাদের মুহূর্ত্তেলগ্নস্থির করিয়া তাহার কেন্দ্রস্থানে শুভগ্রহ থাকিলে জন্মদিবসাবধি দশম, দ্বাদশ একাদশ কিংবা শত দিবসে কিংবা কুলাচারবশতঃ শুভদিনে শুভতিথি ও শুভযােগে শিশুর নামকরণ প্রশস্ত।
নিষ্ক্রমণ — শনি ও মঙ্গল ভিন্ন বারে, রিক্তা ভিন্ন তিথিতে তৎপরে পাপগ্রহ বিযুক্ত নক্ষত্রে আদ্রা অশ্লেষা, কৃত্তিকা, ভরণী মঘা, বিশাখা, পূর্ব্বফল্গুনী, পূর্বাষাঢ়া পূর্বভাদ্রপদ ও শতভিষা ভিন্ন নক্ষত্রে শুভ গ্রহদৃষ্ট কুম্ভ, তুলা, কন্যা ও সিংহলগ্নে পূর্ণচন্দ্রে চন্দ্রের গােচরশুদ্ধ হইলে তৃতীয় বা চতুর্থ মাসে বালকের নিষ্ক্রমণ করাইবে।
অন্নপ্রাশন — পুরুষের ষষ্ঠ বা অষ্টম এবং স্ত্রীলােকের পঞ্চম বা সপ্তম মাসে শুভ চন্দ্র, শনি ও মঙ্গল ভিন্ন বারে, শুক্লপক্ষে, রােহিণী, মৃগশিরা, পুনর্ব্বসু, পুষ্যা, রেবতী, অশ্বিনী, শ্রবণা, ধনিষ্ঠা, হস্তা, চিত্রা, স্বাতী, বিশাখা, অনুরাধা, জ্যেষ্ঠা, উত্তরফল্গুনী, উত্তরাষাঢ়া উত্তরভাদ্রপদ, কৃত্তিকা, শতভিষা ও মঘা নক্ষত্রে দশযােগভঙ্গরােহিতে, বৃষ, মিথুন, ধনু ও কন্যালগ্নে, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, পঞ্চমী, দশমী ও ত্রয়ােদশী তিথিতে অন্নপ্রাশন শুভ।
কর্ণবেধ — জন্মরাশি, জন্মনক্ষত্র ও জন্মমাস, রবি, শনি, মঙ্গলবার ও হরিশয়ন পরিত্যাগ করিয়া শুদ্ধকালে চৈত্র ভিন্ন উত্তরায়ণে, অযুগ্মবর্ষে, গােচরশুদ্ধি রবিতে — পুষ্যা, অশ্বিনী, হস্তা, শ্রবণা, ধনিষ্ঠা, চিত্রা, অনুরাধা, মৃগশিরা, রেবতী, স্বাতী, উত্তরফল্গুনী, উত্তরাষাঢ়া, উত্তরভাদ্রপদ ও পুনর্ব্বসু নক্ষত্রে বুধ, তুলা, ধনু ও মীন লগ্নে, তৃতীয়, একাদশ, পঞ্চম, নবম ও কেন্দ্রস্থানে শুক্রগ্রহ থাকিলে, তৃতীয়, ষষ্ঠ ও একাদশে পাপগ্রহ প্রাপ্ত হইলে কর্ণবেধ প্রশস্ত। যদি অকৃতকর্ণবেধ দুই পুত্র থাকে ও অপর পুত্রের জন্ম হয় তবে তাহাকেষর্ণ কহে তাহাতে তিন পুত্রের অমঙ্গল হয়। অতএব জামাত্র বালকের মাতার ক্রোড়ে বসাইয়া দ্বিগুণ সূত্রবিশিষ্ট সূচীদ্বারা কর্ণবেধ করিবেন।
চূড়াকরণ - অযুগ্ম বর্ষে ও মাসে কিংবা কুলরীতানুসারে সােম, বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবারে, রিক্তা, অমাবস্যা, অষ্টমী, ষষ্ঠী, পূর্ণিমা ও প্রতিপদ ভিন্ন তিথিতে জ্যেষ্ঠা, মৃগশিরা, চিত্রা, রেবতী, স্বাতী, পুনর্ব্বসু, শ্রবণা, ধনিষ্ঠা, শতভিষা, পুষ্যা, অশ্বিনী, মূলা ও হস্তা (মতান্তরে রােহিণী) নক্ষত্রে যুতযামিত্রবেধ ও দশযােগভঙ্গরহিতে কন্যা, মিথুন, বৃষ, ধনু, মকর, কুম্ভ মীনলগ্নে শুক্লপক্ষে, উত্তরায়ণে, রবি, চন্দ্র ও তারাশুদ্ধ হইলে জন্মরাশি, জুম্মনক্ষত্র, জন্মমাস এবং চৈত্র ও পৌষমাস এবং হরিশয়ন ত্যাগ করিয়া চূড়াকার্য্য করিবে। চৈত্রমাসে রবিবারে অগ্নিসন্নিধানে চূড়াকরণ হইতে পারে।
বিদ্যারম্ভ — পুষ্যা, অশ্বিনী, হস্তা, স্বাতী, পুনর্ব্বসু, শ্রবণা, ধনিষ্ঠা শতভিষা, আদ্রা, মূলা, অশ্লেষা, কৃত্তিকা, ভরণী, মঘা, বিশাখা, পূর্ব্বফল্গুনী, পূর্বাষাঢ়া, পূর্বভাদ্রপদ, চিত্রা, রেবতী ও মৃগশিরানক্ষত্রে হরিশয়ন ভিন্ন কালে, শুক্র, বৃহস্পতি ও রবিবারে, কালাশুদ্ধিতে, লগ্নের কেন্দ্রে, পঞ্চম ও নবম, শুভগ্রহ যুক্ত হইলে, অন্যথায় ভিন্ন দিবসে পঞ্চম বর্ষে বিদ্যারম্ভ করাইবে। বৃহস্পতিবারে শ্রেষ্ঠ, শুক্র ও রবিবারে মধ্যম, শনি ও মঙ্গলবারে অল্পায়ু, বুধ ও সােমবারে বিদ্যারম্ভ হইলে মূখ হয়। ষষ্ঠী, প্রতিপদ, অষ্টমী, রিক্তা, পূর্ণিমা ও অমাবস্যা ত্যাগ করিয়া স্বাধ্যায়ে শুদ্ধকালে বিদ্যারম্ভ প্রশস্ত।
উপনয়ন — বৃহস্পতি, রবি, চন্দ্র ও তারাশুদ্ধিতে, হরিশয়ন ভিন্ন উত্তরায়ণে, গলগ্রহাদি দোষরহিত হইলে, শুক্লপক্ষে, বেদ ও বর্ণের অধিপতি গ্রহ শুদ্ধ হইলে দশযােগভঙ্গ ও যুতমিত্রবেধরহিত, রবি, বৃহস্পতি ও শুক্রবারে, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, পঞ্চমী, দশমী, একাদশী ও দ্বাদশী তিথিতে পুষ্যা, হস্তা, অশ্বিনী, উত্তরফল্গুনী, উত্তরভাদ্রপদ, স্বাতী, শ্রবণা, ধনিষ্ঠা, শতভিষা, চিত্রা, অনুরাধা, জ্যেষ্ঠা, মৃগশিরা, রেবতী, পূর্ব্বফল্গুনী, পূর্বাষাঢ়া ও পূর্ব্বভাদ্রপদ ( মতান্তরে রােহিণী, আদ্রা, অশ্লেষা, মূলা, উত্তরাষাঢ়া ) নক্ষত্রে উপনয়ন প্রশস্ত। মতান্তরে সােম ও বুধবারে উপনয়ন বিহিত।